হুগলিতে ইউরোপীয়ওরা আসতে শুরু করে তুর্ক-আফগান আমলে।ডিয়াগো- বেবললো সপ্তগ্রামে এসেছিলেন ১৫৩৫ খ্রষ্টাব্দে। ১৫৩৬ স সুলতান মামুদ পর্তুগিজদের সপ্তগ্রামে বসতি স্থাপনের অনুমতি দেন।তারা যে শুধু বাণিজ্যে লিপ্তই ছিল তা নয় , ১৫৮০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই সপ্তগ্রাম ও হুগলিতে স্থায়ী বসবাস ও এক ধরণের জমিদারি অবস্থায় তারা তৈরি করে নিলো, সঙ্গে লুঠতরাজ,দস্যুবৃত্তি ও দাসবাবসা। ইতিহাস বলছে,১৬২১ থেকে ১৬২৪ আর মধ্যে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম থেকেই ওরা ৪২০০০ মানুষকে দাস হিসাবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। আর তার সাথে ছিল খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে ওদের জোরজবরদস্তি। শাহজাহান সম্রাট হবার পরে , এরা আনুগত্য দেখিয়ে দূত বা চিঠি পর্যন্ত পাঠায়নি।........এইভাবেই ব্যাবহারের ক্ষেত্রেও ঔদ্ধত্য দেখতে শুরু করেছিল ওরা। এইসব ব্যাপারেই শাজাহান ক্ষিপ্ত হয়ে বাংলার শাসনভার দিয়ে পাঠালেন কাশিম খান জুইনি কে , উদ্দেশ্য পর্তুগিজদের বঙ্গ থেকে তাড়ানো। জল স্থল উভয়দিক থেকে আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিলেন কাশিম খান। জুন ১৬৩২,........... বর্ধমানের দিক থেকে মোঘলবাহিনী আসে ঢুকলো হলদিপুরে,......,. ২২শে জুন মোঘলরাই প্রথম আক্রমণ করলো।....... তখন ৩০০ পর্তুগিজ সাহেব,কিছু দেশীয় দাস,আর ছিল ৪০০০ বাঙালি নাবিক, পর্তুগিজদের নেতৃত্ব দিলেন মোনোয়েল দে আজেভেদো।যুদ্ধ চললো দু দিন ,..... পর্তুগিজরা হেরে গিয়ে মোঘলদের কাছে শান্তি প্রস্তাব পাঠালো। মোঘল সেনাপতিকে দিলো ১ লাখ টাকা আর ফেরত দিলো সেইসব ধর্মন্তরিত মুসলিমদের,যাদের জোর করে খ্রিস্টান করা হয়েছিল। মোঘলরা চাইলো ৭ লক্ষ টাকা ,পর্তুগিজরা তা দিতে চাইলো না। .... পুনরায় শুরু হলো যুদ্ধ। আবার মুঘলরা হুগলী যে ঢুকে গোলাবর্ষণ করতে লাগলো।হাতির পিঠে সেনাবাহিনী ভেঙে তছনছ করে দিলো হুগলি , পর্তুগিজরা হুগলী ছেড়ে পালালো।....মুঘলদের সদর দপ্তর হলো হুগলী। যে সকল দেশীয় মানুষ পর্তুগিজদের সমর্থন করতে বাধ্য হয়েছিল, মুঘলরা তাদের নিজেদের দিকে নিয়ে এলো।৯ই সেপ্টেম্বর ,১৬৩২ নৌযুদ্ধেও হেরে গেলো তারা, তাদের রণতরীগুলি তছনছ হয়ে গেলো ,বিপর্যস্ত পর্তুগিজরা ঠিক করলো ১৪ই সেপ্টেম্বর তারা হুগলী ত্যাগ করবে। সেইমতোই তারা
সমুদ্রের উদ্দেশে পারি দিলো। আবার ঘটলো আর এক বিপত্তি, গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ রণতরী ও দক্ষ নাবিকের অভাব, এই দুইয়ের ফলশ্রুতিতে বহু রণতরীর ডুবে গেল। সাগরদ্বীপে জিয়া পৌঁছলো মাত্র কয়েকটি।পর্তুগিজদের ১০০০০ মানুষ এই যুদ্ধে মারা গিয়েছিল ,বন্দি হয়েছিল ৪০০ জন মানুষ ,তাদের ম্মুঘোল দরবারে নয়া যাওয়া হয়েছিল, এত গবেষণায় প্রমাণিত।অতএব ইতিহাস বলছে ,যায় হুগলী জেলার মাটিতেই সর্বপ্রথম ইউরোপীয়দের সাথে ভারতীয়দের যুদ্ধ হয় এবং তাতে ইউরোপীয়দের পরাজয় ঘটে। ফটো- গুগল সৌজন্যে
Wednesday, 20 July 2016
history of hooghly
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment