Friday, 21 October 2016

বলাগড়ের রাসমেলায় বিন্দুবাসিনী পুজো পথ দেখাক।........................বন্ধ হোক এই পৈশাচিক প্রথা ,......বলাগড়ের রাসমেলায় মহিষবলি

সম্প্রতি   ভুপালে পশুপাখীর অধিকার সংরক্ষণ কর্মীরা তাজ-উল-মসজিদের সামনে, ঈদ-আল-আধাতে মুসলমানদের পশু কোরবানি না দেবার অনুরোধ সম্বলিত বাণীর প্ল্যাকার্ড নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল নিরামিষ আহার স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো তো বটেই, উপরন্তু পরিবেশ, প্রকৃতি ও পশুপাখীদের জন্যেও ভালো। বেনাজির সুরাইয়া ছিলেন এই কর্মীদের একজন। তাঁর পরিধানে ছিল সবুজ রঙের হিজাব এবং লেটুস পাতা দিয়ে মোড়া পরিচ্ছ্দ। তাঁর হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল Make Eid happy for all- Try Vegan, অর্থাৎ ঈদ যেন সবার জন্য আনন্দময় হোক, নিরামিষ খাবার খেয়ে দেখার চেষ্টা করতে পারেন।
এই আন্দোলনের আয়োজন করেছিল মুম্বাইয়ের PETA নামে একটি পশুপাখীর অধিকার সংরক্ষণে নিয়োজিত সংস্থা যার সদস্যরা বিশ্বাস করে যে এই পৃথিবীতে পশুদের অস্তিত্ব শুধুমাত্র আমাদের খাদ্য, পোষাক আর আমোদের চাহিদা পূরণ করবার জন্য নয়। কিন্তু জনতার ওপর তাদের এই বাণীর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় , তারা PETAর মহিলাকর্মীদের ওপর চড়াও হয়ে ঘুষি থেকে আরম্ভ করে জুতো ও পাথরও ছুড়ল। পুলিশ সেই কর্মীদের না বাঁচালে ঘটনা আরো খারাপ হতে পারত। পরবর্তিকালে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য পুলিশও বেনাজির সুরাইয়া ও আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে ।
বেনাজির বলতে চেয়েছিলেন পশুদের হত্যা না করেও পবিত্র ঈদ-উল-আধা পালন করা সম্ভব, প্রাণী হত্যা না করে নিরামিষ পুষ্টিকর খাবার খেয়ে বাঁচা সম্ভব, একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব।
কিন্তু বেনাজিরের এই কথা শুধুমাত্র ইসলামের জন্যই প্রযোজ্য নয়, পশুদের প্রতি দয়া সব ধর্মেরই মর্ম। মহাত্মা গান্ধী কলকাতার কালীঘাট মন্দিরে পশুর বলি দেখে খুবই মর্মাহত হয়েছিলেন। পরে নিজের আত্মকাহিনীতে তিনি লিখেছিলেন যে একজন সাধুকে যখন তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ”এই পশুবলিকে কি আপনি ধর্ম বলে মনে করেন?” তখন সাধু উত্তরে বলেছিলেন, “এমন কোন মানুষ আছে যে পশুবলিকে ধর্ম বলে মনে করবে?” গান্ধী মনে করতেন পশুবলি এমন একটি পাপ যার স্থান নেই কোন ধর্মেই।

 নবী হযরত মুহাম্মদ যিনি “পুরো সৃষ্টির রহমত” হিসেবে এসেছিলেন (আল কুরান ২১:১০৭) তিনি পশুদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে বলেছিলেন। সুন্নি ইসলামের অন্যতম হাদিথ গ্রন্থ, শাহি আল-বুখারিতে লেখা আছে হযরত মুহাম্মদকে একবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে পশুপক্ষীদের প্রতি দয়ামায়া দেখালে কি পরকালে কেউ পুরস্কৃত হয়। হযরত মুহাম্মদ উত্তরে বলেন, “যে কোনো প্রাণীকে দয়ামায়া দেখালে তার পুরস্কার নিশ্চয়ই আছে।” কিন্তু ঈদের সময় পশুদের সাথে যে দুর্গতি ঘটে তা দয়ামায়া থেকে অনেক দূরে। কুরবানির  বলির আগে পশুদের আগে  বহুদূর থেকে জল ও খাবার ছাড়া হয় হাঁটিয়ে নিয়ে আসা হয়, অথবা ট্রাকে গাদাগাদি করে অবর্ণনীয় দুদর্শার মধ্যে চালান দেওয়া হয়। এমন কি একটি ক্ষেত্রে ভারত সীমান্ত থেকে বাংলাদেশ পাচারের ক্ষেত্রে ঐ পার থেকে পাহাড়ের ঢাল দিয়ে পশুদের ঠেলে গড়িয়ে দেবার ঘটনাও আছে। তাই এর মধ্যে অনেক পশুই গরমে, না খেতে পেয়ে অথবা অন্যান্য অত্যাচারে যাত্রা শেষ হবার আগেই মারা যায়। কুরবানির বা বলির সময় তাদের পা বেঁধে গলার উপর দিয়ে ছুরি বা খাঁড়া চালালে জীবন ও মরণের মধ্যে লড়াইয়ে তারা ছটফট করতে থাকে আর তাদের শেষ নিশ্বাস না পড়া পর্যন্ত কয়েক মিনিট পার হয়ে যেতে পারে। আর এই মর্মান্তিক দৃশ্যটি সংঘটিত হয় বাদবাকি অপেক্ষারত আতঙ্কিত পশুদের সামনে।
এই পুরো ব্যাপারটা না মানবিক না হালাল এবং যে ইসলাম আমাদের ভালোবাসা ও দয়ামায়ার ব্যাপারে সংবেদী হতে শেখায় তার সাথে এর কোনও সঙ্গতি নেই। তাই PETA  বলতে চেয়েছিল আমিষ পদার্থের বদলে শব্জী, ফলমূল, অথবা অর্থ ইত্যাদি দান করলে ইসলামের নীতি মেনে চলাও হবে এবং হযরত ইব্রাহিমের কাহিনীকে স্মৃতিতে জাগ্রত রাখা যাবে। আল কুরানে লেখাই আছে আল্লাহাতালার কাছে কুরবানি দেওয়া পশুটি বা তার রক্ত পৌছায় না, পৌঁছায় শুধু মানুষের ধর্মানুরাগ (আল কুরান ২২;৩৭)।
আজ আমি আবার আমার সব হিন্দু ও মুসলমান বন্ধুদের কাছে পশু কোরবানি বা বলি  দেবার রীতিকে পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।হিন্দু ধর্মের অর্থ যদি ত্যাগ ও তিতিক্ষা এবং ইসলামের মর্ম যদি উদারতা এবং সমবেদনা  হয় তাহলে পশু কুরবানি বা বলি দেওয়া ছাড়াও আরও অনেক পদ্ধতি খুঁজে নেওয়া যাবে।
 পূজায় পশুবলি উচিত কি না?
শাস্রে পূজায় বলির কথা বলা হয়েছে কিন্তুু সরাসরি পশুবলির কথা বলা হয়নি। শাস্ত্রে  পূজার মাধ্যমে কাম, ক্রোধ, লোভ, হিংসাকে বলির কথা বলা হয়েছে পশুবলির কথা বলা হয় নি।
তাছাড়া মহাজ্ঞানী  শ্রীশঙ্করাচার্য বলেছেন "জীব ব্রম্মইব নপর"
জীব ব্রম্ম ছাড়া কিছুই নয়।
এই কথা সবসময় মনে রাখতে হবে। যিনি নিজেকে প্রকৃত হিন্দু মনে করেন তিনি এই  কোনদিন পশুবলি দেওয়ার পক্ষে হতে পারেন না। 
 
ইরানের জরথ্রুস্ট ধর্ম আর ভারতীয় বৈদিক আর্য ধর্ম প্রায় সমগোত্রীয় যেমনটা ভারতীয় বৈদিক আর্যদের সাথে ইরানীয় আর্যদের একটা জাতিগত মিল আছে। ভারতীয় আর্য হল আর্মেনীয় আর্য আর ইরানীয়রা হল পারসিক আর্য। আর জার্মানরা হল নর্ডিক আর্য। যাইহউক, হিন্দুদের মূল ধর্মগ্রন্থ হল বেদ, বেদের দার্শনিক ব্যাখ্যা হল উপনিষদ ও বেদান্ত আর পুরান বা স্মৃতিশাস্ত্র হল ইতিহাস গ্রন্থ। হিন্দুরা ভগবদ গীতাকে মনে করে ঈশ্বরের বানী যা ঈশ্বরের মহাবতার শ্রীকৃষ্ণ নিজ মুখে বলেছিলেন। গীতাকে সর্ব উপনিষদের সার বলা হয়। এই গীতাতে পশুবলিকে রদ করা হয়েছে। ভগবান গীতায় বলেছেন, পত্র পুষ্প ফল মূল ভক্তিসহকারে নিবেদন করলে তিনি তা গ্রহণ করেন (গীতা ৯/২৬)। গীতায় আরও বলা হয়েছে যে, বেদের কর্মসমূহ হল জাগতিক গুণসম্পন্ন (গীতা ৮/২৮)। কিন্তু গীতার শিক্ষা হল জাগতিক গুণের অতীত হওয়া। কর্মের উদ্দেশ্য হল জ্ঞান, জ্ঞানের উদ্দেশ্য হল ভক্তি, ভক্তির উদ্দেশ্য হল মুক্তি লাভ করা। যাহোক বেদে গোমেধ, অশ্বমেধ প্রভৃতি যজ্ঞে পশু বলের বিধান ছিল। কিন্তু মহির্ষি বশিষ্ঠ গোমেধ, অশ্বমেধ প্রভৃতি যজ্ঞের বিধান রহিত করেন। গীতায়ও ভগবান এর পরিবর্তে জ্ঞান, ভক্তি, ধ্যান প্রভৃতি যোগের কথা বলেছেন। তবে তন্ত্রমতে কালিপূজায় যে পশুবলি দেয়া হয় তাকে তমোগুণসম্পন্ন বলা হয়েছে যা হল নিন্মতম স্তরের গুণ এবং তা গীতায় অনুমোদিত হয়নি।একসময় নরবলি ও সতীদাহকেও ধর্মের মোড়ক দেওয়া হয়েছিল ,আমরা যদি এইসব কুসংস্কারের থেকে বেরিয়ে আসতে পারি, তবে ধর্মের নাম করে নৃশংস পশুবলি বা কুরবানী থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে  পারবোনা কেন। ......



ব্রাহ্মণ্য ধর্মের  ভণ্ডামির উপর চমৎকার স্যাটায়ার লিখতেন ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়, তাঁর ডমরুচরিত ইত্যাদি অনেক গল্পে। একটি গল্পে তিনি একজন অত্যন্ত ধার্মিক নিষ্ঠাবান হেঁদু ব্রাহ্মণ ‘শ্রীল শ্রীযুক্ত গোলোক চক্রবর্তী’ মহাশয়ের পাঁঠা ব্যবসার মর্মস্পর্শী ছবি এঁকেছেন। ঠাকুরমশায়ের ব্যবসা হল পাঁঠার খোঁয়াড় চালানো, এবং ধর্মমতে পাঁঠা বলি দিয়ে তার ‘শাস্ত্রসম্মত’ মাংস নিষ্ঠাবান খাদকদের কাছে জোগান দেওয়া, আর চামড়া-টামড়া বিক্রি করে উপরি আয়।
পাঁঠাকে ফেলিয়া ঠাকুর মহাশয় তাহাকে সেই খোঁটায় বাঁধিলেন। তাহার পর তাহার মুখদেশ নিজের পা দিয়া মাড়াইয়া জীয়ন্ত অবস্থাতেই মুণ্ডদিক হইতে ছাল ছাড়াইতে আরম্ভ করিলেন। পাঁঠার মুখ গুরুদেব মাড়াইয়া আছেন, সুতরাং সে চীৎকার করিয়া ডাকিতে পারিল না। কিন্তু তথাপি তাহার কণ্ঠ হইতে মাঝে মাঝে এরূপ বেদনাসূচক কাতরধ্বনি নির্গত হইতে লাগিল যে, তাহাতে আমার বুক যেন ফাটিয়া যাইতে লাগিল। তাহার পর তাহার চক্ষু দুইটি! আহা! আহা! সে চক্ষু দুইটির দুঃখ আক্ষেপ ও ভর্ৎসনাসূচক ভাব দেখিয়া আমি যেন জ্ঞান-গোচরশূন্য হইয়া পড়িলাম। সে চক্ষু দুইটির ভাব এখনও মনে হইলে আমার শরীর রোমাঞ্চ হইয়া উঠে। আমি আর থাকিতে পারিলাম না। আমি বলিয়া উঠিলাম— ‘ঠাকুর মহাশয়! ঠাকুর মহাশয়! করেন কি? উহার গলাটা প্রথমে কাটিয়া ফেলুন। প্রথম উহাকে বধ করিয়া তাহার পর উহার চর্ম্ম উত্তোলন করুন।’
ঠাকুর মহাশয় উত্তর করিলেন—‘চুপ! চুপ! বাহিরের লোক শুনিতে পাইবে। জীয়ন্ত অবস্থায় ছাল ছাড়াইলে ঘোর যাতনায় ইহার শরীরের ভিতরে ভিতরে অল্প অল্প কাঁপিতে থাকে। ঘন ঘন কম্পনে ইহার চর্ম্মে একপ্রকার সরু সরু সুন্দর রেখা অঙ্কিত হইয়া যায়। এরূপ চর্ম্ম দুই আনা অধিক মূল্যে বিক্রীত হয়। প্রথম বধ করিয়া তাহার পর ছাল ছাড়াইলে সে চামড়া দুই আনা কম মূল্যে বিক্রীত হয়। জীয়ন্ত অবস্থায় পাঁঠার ছাল ছাড়াইলে আমার দুই আনা পয়সা লাভ হয়। ব্যবসা করিতে আসিয়াছি, বাবা! দয়ামায়া করিতে গেলে আর ব্যবসা চলে না।’
 পৃথিবীর নিয়মই হচ্ছে খাদ্য খাদকের ,তৃণভোজী মাংসাশী কেউই এই নিয়মের বাইরে নয় . এইক্ষেত্রে বলে রাখি একটি গাছ ও কিন্তু একটি প্রাণ . জীবনধারণের জন্য খাদ্য খাদকের সম্পর্ক আর ধর্মের নাম করে নৃসংশ প্রাণীহত্যা ,....... এই দুটোর প্রেক্ষিত আলাদা . যে কোনো ধর্মেরই মূল কথা হলো ,মানবতা,ত্যাগ,উদারতা ,সমবেদনা ,ইত্যাদি . এই নৃশংসতা কোনো ধর্মানুরাগ হতে পারে না ..........
'ধর্ম' হচ্ছে কোন কিছুর অবস্থা, গুণ বা বৈশিষ্ট্য।যেমন,জলের ধর্ম তারল্য,আগুনের ধর্ম উত্তাপ;
ঠিক তেমনিভাবে প্রত্যেক মানুষেরও ধর্ম আছে।আর তা হচ্ছে মনুষ্যত্ব।
জলের ধর্ম যেমন জল নিজে সৃষ্টি করেনি
বা এমনি এমনি সৃষ্টি হয়নি; ঠিক
তেমনিভাবে মানুষের ধর্মও মানুষ নিজে
সৃষ্টি করেনি, করেছেন স্রষ্টা।তাই
প্রকৃতপক্ষে ধর্ম হচ্ছে স্রষ্টা আর সৃষ্টির মধ্যে যে সম্পর্ক।
আমার মত হল ,যা মানুষকে ধারন করে থাকে তাই ধর্ম . ...... সব ধর্মেই ধর্মের মোড়কে নৃশংসতা সৃষ্টি হয়েছিল একটা সাধু উদ্দেশ্য নিয়ে,(অবশ্য এটা আমার নিজস্ব ব্যাখ্যা,আমি পন্ডিত নই ,ধর্ম সম্পর্কে বিশেষ কিছু বুঝিও না , আমি আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে যতটুকু বুঝি,তাই বলার চেষ্টা করি ) একসময় বিরাট সংখক মানুষ আর্থিকভাবে অনুন্যত ছিল,রাজা বা ধনী মানুষের পৃষ্ঠপোষকতায় পশুদের বলি বা কুরবানী করে তার মাংস এই দরিদ্র শ্রেণীর বিতরণ করা হতো .

আমাদের  হুগলী জেলায় এখনো বিভিন্ন জায়গায় ধর্মের নাম করে পশুবলির প্রথা চালু রয়েছে। কোন্নগরের শকুন্তলা কালীপুজোয় ছাগবলি,বলাগড়ের রাসমেলায় মহিষবলি ,ইনছুড়ার ঝাঁপানে ছাগবলি,দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিনে রাজবলহাটের দেবী রাজবল্লভীর মন্দিরে মহিষবলি,ও আরো অনেক জায়গায় ধর্মের নাম করে এই পৈশাচিক প্রথা চলে আসছে। 
আমাদের এলাকায় বিন্দুবাসিনী পুজো (যার পরিপ্রেক্ষিতে এই পোস্ট তীর অবতারণা ) আঙিনায় গত 303 বছর ধরে ছাগল,ভেড়া ও মোষ বলি হয়ে আসছে , বলির দিনই এই দেহগুলো আদিবাসী পাড়ায় দিয়ে দেওয়া হতো . এই উপলক্ষ্যে পরদিন আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক মেলা হতো
সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই বদলে যায়,আচরণ সামাজিকতা,ধর্মাচরণ ও , সময়ের সাথে সাথে বলাগড় অঞ্চল ও উন্নত, আজ আদিবাসী পাড়ায় অনেক শিক্ষিত মানুষের বাস, তাঁদের অনেকেই শিক্ষক,সরকারি কর্মচারী,বা অন্যান্য....... এই পাড়ার অনেক মানুষই আজ এই বীভৎস প্রথার বিরুদ্ধাচরণ করেন , প্রায় দুই দশক আগেই এই আদিবাসী মেলা বন্ধ হয়ে গেছে ,
আমি মনে করি আজ আর এই মোষ বলির কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই. একসময় সমাজের পিছিয়ে পড়া এই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন সময় ও সমাজকে সম্মান জানিয়ে এই মেলা বন্ধ করে দিতে পারেন, আমরা স্বঘোষিত শিক্ষিত বুদ্ধিমান,উচ্চবর্ণের মানুষরা কেন এই নৃশংস বীভৎস প্রথা বন্ধ করতে পারবো না ............


 আমি বিশ্বাস করি এবং আমার ধারণা আমার মত অনেক মানুষই বিশ্বাস করেন ,মানুষের একটাই  ধর্ম মানবতা।  আসুন আমার নিজ ধর্মের মূল কথা মানবতাকে সম্মান করি,...............
আসুন, আমরা পথ  দেখাই ,বন্ধ হোক এই পৈশাচিক প্রথা ,........
আমাদের ধর্মাচরণ শুরু হোক বলাগড়ের রাসমেলায় বলি বন্ধ করেই। ....................
যুগে যুগে হুগলি জেলাই পথ দেখিয়েছে বাংলাকে তথা ভারতবর্ষকে, পশুবলির এই পৈশাচিক প্রথা বন্ধে হুগলি জেলা পথ দেখাক।............
বলাগড়ের রাসমেলায় বিন্দুবাসিনী পুজো  পথ দেখাক।............................
কোন্নগরের শকুন্তলা কালীপুজো পথ দেখাক।.......................
ইনছুরার ঝাঁপান মেলায় মনসা পুজো পথ দেখাক।.............................
 রাজবলহাটের রাজবল্লভী মায়ের পুজো পথ  দেখাক।............................................
আগামী বসন্তে শ্রীপুর বলাগড়ের রাসমেলা ও বিন্দুবাসিনী পুজো হোক বলিবিহীন,নির্মল,.............মা বিন্দুবাসিনীর চরণে নিরীহ পশুদের বদলে ,আমরা বলি দিই আমাদের কাম ,ক্রোধ,লোভ ও হিংসাকে ,........... 

21 comments:

  1. তথ্য গুলি খুব সুন্দর...পূর্ণ সমর্থন জানাই আপনার মতামত কে#Dada

    ReplyDelete
    Replies
    1. পূর্ণ সমর্থন জানাই !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

      Delete
  2. Puja and Kurbani chara protidin pritibite j lukh lukh jib hotta hoy kabarer jonno ai gula ki? Hotel restaurant gulay kara jay ba kivabe chole, dormer upor matobbori korte hole ganja kawa charte hobe, naribaji charte hobe, tora ki doroner projati ta sobai jane, be polite and be wise, idiot.

    ReplyDelete
  3. মান্যবরেষু , আপনার নাম আমি জানি না, আপনার ব্লগ থেকে জানার উপায় ও নেই., এটা আমারই ব্যার্থতা যে আমি আপনাকে আমার বক্তব্য ঠিক বোঝাতে পারি নি ........ পৃথিবীর নিয়মই হচ্ছে খাদ্য খাদকের ,তৃণভোজী মাংসাশী কেউই এই নিয়মের বাইরে নয় . এইক্ষেত্রে বলে রাখি একটি গাছ ও কিন্তু একটি প্রাণ . জীবনধারণের জন্য খাদ্য খাদকের সম্পর্ক আর ধর্মের নাম করে নৃসংশ প্রাণীহত্যা ,....... এই দুটোর প্রেক্ষিত আলাদা . যে কোনো ধর্মেরই মূল কথা হলো ,মানবতা,ত্যাগ,উদারতা ,সমবেদনা ,ইত্যাদি . এই নৃশংসতা কোনো ধর্মানুরাগ হতে পারে না .......... আপনাকে বোঝাতে পারলাম কি না জানি না .
    পরিশেষে বলি আমিই আপনার পরিচিত নই,বা আপনার নাম ও জানি না , কিন্তু মান্যবরেষু আপনি আপনার কমেন্ট এ' আপনার 'তুই ' আর 'ইডিয়ট ' সম্ভাষণেই আপনার পরিচয় বুঝিয়ে দিয়েছেন .................

    ReplyDelete
  4. শুধু বলি বলিদান মানেই যে জীব হত্যা তা নহে॥ প্রতিটি বলিদানের ভিতরে ষড়রিপু অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত॥ তাই ষড়রিপু কে বলি করাই হলো বলিদানের প্রধান কর্ত্তব্য!ইহাই আমার একান্ত মত ॥

    ReplyDelete
  5. শুধু বলি বলিদান মানেই যে জীব হত্যা তা নহে॥ প্রতিটি বলিদানের ভিতরে ষড়রিপু অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত॥ তাই ষড়রিপু কে বলি করাই হলো বলিদানের প্রধান কর্ত্তব্য!ইহাই আমার একান্ত মত ॥

    ReplyDelete
  6. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  7. আপনার প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। এই লেখাটি প্রসঙ্গে কিছু কথা (আমার একান্ত ব্যাক্তিগত মতামত) বলতে চাই। লেখাটির বেশিরভাগ অংশ জুড়ে আপনি ধর্ম কে হাতিয়ার করে একটি ধর্মীয় কুপ্রথাকে বিলোপ করার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। ধর্মকে শ্রীখন্ডী করে শান্তিপ্রিয় আর রক্তপিপাসুদের বাদানুবাদ নতুন নয়। শান্তিপ্রিয় যদি ধর্মকে হাতিয়ার করে শান্তির পক্ষে যুক্তি দেয়, রক্তপিপাসুর কাছে তা খণ্ডন করার জন্য যুক্তি কিন্তু ধর্মই সরবরাহ করে। কারণ ধর্ম মোটেই ধোয়া তুলসী পাতা নয়। তাই ধর্মনিরপেক্ষতাই এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ। মোষ-বলি রদ করার পিছনে একটিমাত্র যুক্তিই আমার পছন্দ। সেটি হলো ``রক্ত নিয়ে উল্লাস বর্বরতা মাত্র"।

    আরো একটি কথা। Learn Stock কে প্রত্যুত্তর এ আপনি তৃণভোজী ও মাংসাশী নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেটাকে আমি পূর্ণ সমর্থন করি। কিন্তু এই ব্যাখ্যা আপনার লেখাটিতে প্রকাশ পায় নি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. মান্যবরেষু নীলাদ্রীবাবু ,আপনার মতামতের সাথে আমি সম্পূর্ণরূপে একমত ,আপনার যুক্তি সঠিক . আর পরিপ্রেক্ষিতে আমি দু-একটি কথা বলার অনুমতি প্রার্থনা করি .
      'ধর্ম' হচ্ছে কোন কিছুর অবস্থা, গুণ বা বৈশিষ্ট্য।যেমন,জলের ধর্ম তারল্য,আগুনের ধর্ম উত্তাপ;
      ঠিক তেমনিভাবে প্রত্যেক মানুষেরও ধর্ম আছে।আর তা হচ্ছে মনুষ্যত্ব।
      জলের ধর্ম যেমন জল নিজে সৃষ্টি করেনি
      বা এমনি এমনি সৃষ্টি হয়নি; ঠিক
      তেমনিভাবে মানুষের ধর্মও মানুষ নিজে
      সৃষ্টি করেনি, করেছেন স্রষ্টা।তাই
      প্রকৃতপক্ষে ধর্ম হচ্ছে স্রষ্টা আর সৃষ্টির মধ্যে যে সম্পর্ক।
      আমার মত হল ,যা মানুষকে ধারন করে থাকে তাই ধর্ম . ...... সব ধর্মেই ধর্মের মোড়কে নৃশংসতা সৃষ্টি হয়েছিল একটা সাধু উদ্দেশ্য নিয়ে,(অবশ্য এটা আমার নিজস্ব ব্যাখ্যা,আমি পন্ডিত নই ,ধর্ম সম্পর্কে বিশেষ কিছু বুঝিও না , আমি আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে যতটুকু বুঝি,তাই বলার চেষ্টা করি ) একসময় বিরাট সংখক মানুষ আর্থিকভাবে অনুন্যত ছিল,রাজা বা ধনী মানুষের পৃষ্ঠপোষকতায় পশুদের বলি বা কুরবানী করে তার মাংস এই দরিদ্র শ্রেণীর বিতরণ করা হতো .
      আমাদের এলাকায় বিন্দুবাসিনী পুজো (যার পরিপ্রেক্ষিতে এই পোস্ট তীর অবতারণা ) আঙিনায় গত 303 বছর ধরে ছাগল,ভেড়া ও মোষ বলি হয়ে আসছে , বলির দিনই এই দেহগুলো আদিবাসী পাড়ায় দিয়ে দেওয়া হতো . এই উপলক্ষ্যে পরদিন আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক মেলা হতো
      সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই বদলে যায়,আচরণ সামাজিকতা,ধর্মাচরণ ও , সময়ের সাথে সাথে বলাগড় অঞ্চল ও উন্নত, আজ আদিবাসী পাড়ায় অনেক শিক্ষিত মানুষের বাস, তাঁদের অনেকেই শিক্ষক,সরকারি কর্মচারী,বা অন্যান্য....... এই পাড়ার অনেক মানুষই আজ এই বীভৎস প্রথার বিরুদ্ধাচরণ করেন , প্রায় দুই দশক আগেই এই আদিবাসী মেলা বন্ধ হয়ে গেছে ,
      আমি মনে করি আজ আর এই মোষ বলির কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই. একসময় সমাজের পিছিয়ে পড়া এই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন সময় ও সমাজকে সম্মান জানিয়ে এই মেলা বন্ধ করে দিতে পারেন, আমরা স্বঘোষিত শিক্ষিত বুদ্ধিমান,উচ্চবর্ণের মানুষরা কেন এই নৃশংস বীভৎস প্রথা বন্ধ করতে পারবো না ............

      Delete
    2. আপনার উপযুক্ত প্রত্যুত্তরের জন্য ধন্যবাদ। প্রত্যুত্তরের ব্যাপারে পরে আসছি। তার আগে কিছু কথা বলে নি। আমার পৈতৃক নিবাস শ্রীপুর ছোট বারোয়ারি তলায় হলেও আমি বহুদিন থেকেই বালাগড়ের বাইরে থাকি। গত রবিবার রাতে ভোটাভুটির ব্যাপার টা প্রথম শুনি। ফলাফল শুনে আমিও অনেকের মতোই মর্মাহত। তারপর যখন শুনি বিজয়ী পক্ষের কিছু মানুষ ফল ঘোষণার পর বাজি পুড়িয়ে উল্লাস করেছে, তখন মনটা আরো খারাপ হয়ে যায়। তারপর একটু খোঁজাখুঁজি করে দেখি আমার কয়েকজন পরিচিত ব্যক্তি আপনার এই লেখাটিকে ফেসবুকে তুলে ধরেছেন। অর্থাৎ আপনার এই লেখাটি 'মোষ-বলি রদ' আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার। তাই লেখাটা পড়ে ফেলি। লেখাটি প্রশংসনীয় এবং কিছু মূল্যবান তথ্যকে লিপিবদ্ধ করে। লেখাটির কিছু ব্যাপার আমার বিচারবুদ্ধির সঙ্গে মেলে না, যদিও আমিও আপনার মতোই 'মোষ-বলি রদ' এর পক্ষে। সেটা আপনাকে জানাই। আপনার প্রত্যুত্তরে আমার বক্তব্যকে আপনি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন এবং এজন্য সাহস করে আরো কিছু কথা বলি।

      আমাদের সমাজে সমস্যা অনেক। যেমন অশিক্ষা, দারিদ্র, ধর্মীয় মৌলবাদ, দুর্নীতি, পুরুষতন্ত্র, হোমিওপ্যাথি এবং আয়ুর্বেদের মতো অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসাপ্রথার যথেচ্ছ প্রয়োগ ইত্যাদি ইত্যাদি। সে তুলনায় পশুবলির গুরুত্ব আপাতদৃষ্টিতে কম (কেউ বলতে পারেন যে পশুবলি অশিক্ষার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত, কিন্তু সেক্ষেত্রে 'ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়' হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা, অন্তত বর্তমান পরিস্থিতিতে।)। কারণ এই প্রথায় মানুষের প্রত্যক্ষ ক্ষতি অনুধাবনযোগ্য নয়। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টও পশুবলির ব্যাপারে উপযুক্ত রায় দিতে অপারগ।

      বালাগড়ে 'মোষ-বলি রদ' এর স্বপক্ষে জনসমর্থন আদায়ের একমাত্র উপায় হলো যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে মানুষকে বোঝানো যে এটি একটি বর্বর প্রথা। আধুনিক যুগে এটির কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই (আপনিও প্রত্যুত্তরে একই যুক্তি দিয়েছেন)। বাধা দেওয়ার জন্যও কিছু মানুষ তৎপর। তারাও মোটেই ঘাসে মুখ দিয়ে চলে না। তারাও যুক্তি সাজাতে পারে (অন্য একটি ব্লগ-পোস্টে আপনি তাদের মূর্খ বলেছেন। আমি ভুল বুঝলে শুধরে দেবেন। ) । যেহেতু দায়টা 'মোষ-বলি রদ' এর স্বপক্ষে যারা তাদের, তাই তাদের যুক্তিগুলো জোরালো এবং সংগতিপূর্ণ হতে হবে। আপনার মূল লেখার শুরুতেই 'Make Eid happy for all- Try Vegan' এর উল্লেখ করেছেন, যেটি আমার অনাবশ্যক মনে হয়েছে। এই ব্যাখ্যা মোষ-বলির স্বপক্ষে যারা তাদের যুক্তির পলে হওয়া দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। এই ধরণের ব্যাখ্যা মোটেই 'খাওয়ার জন্য পশুহত্যা এবং হত্যা নিয়ে উল্লাস এক নয়' ধরণের যুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। Learn Stock কে লেখা আপনার প্রত্যুত্তর পরে আমার মনে হয়েছে আপনিও 'খাওয়ার জন্য পশুহত্যা এবং হত্যা নিয়ে উল্লাস এক নয়' যুক্তিটাকেই সামনে আনতে চান, Try Vegan নয়। ভুল বুঝলে শুধরে দেবেন। আমাকে প্রত্যুত্তরে ধর্মের ব্যপারটাকে যেভাবে ব্যাখ্যা করেছেন সেটা আমার খুব ভালো লেগেছে। আমার ব্যক্তিগত মতামত এই যে এই ধরণের ব্যাখ্যাকেই মূল লেখাতে সামনে আনা উচিত।

      লেখা চালিয়ে যান। পশে আছি। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

      Delete
  8. সুপ্রিয় নীলাদ্রীবাবু,আপনার গঠনমূলক সমালোচনার জন্য প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই . আপনি বলাগড়ের মানুষ শুনে ভালো লাগলো. আপনার সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি কথা বলতে চাই।

    প্রথমত এক জায়গায় আপনি বলেছেন,'এই প্রথায় মানুষের প্রত্যক্ষ ক্ষতি অনুধাবনযোগ্য নয়।' আপনার মতামতের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে বলি , বলির বীভৎসতা মানুয়ের মনের ওপর প্রচন্ড প্রভাব পরে , বিশেষ করে শিশুমনের ওপর . তার প্রতক্ষ্য প্রমান আমি নিজে .আমি একবারই এই বলি দেখেছি,1979 সালে , আমি তখন সদ্য কিশোর , দেখার পর আমি তখনকার মতো সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার মতো শারীরিক সক্ষমতা হারিয়ে ফেলি , এবং তারপর ও বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলাম . (প্রসঙ্গত জানাই আমি জিরাটে থাকি , ঔষধ ব্যবসা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার সাথে যুক্ত ) তখনি আমার মনে হয়েছিল এই নিষ্ঠুরতা কেন? পরবর্তী কালে আমি বেক্তিগত ভাবে বহু মানুষ কে এটা বোঝানোর চেষ্টা করে আসছি। আমি দেখেছি এই ধরণের নিষ্ঠুরতা ক্রমাগত দেখতে থাকলে মানুষের এক ধরণের পরিবর্তন হয় ,.

    যার কারণ হলো ,ও সহিষ্ণুতা,একাকিত্ব,ইত্যাদি। এইভাবে প্রকাশ্যে বলি বা কুরবানী এক ধরণের দৃশ্যদূষণ ও . আজকের এই দূষিত পৃথিবীতে প্রচুর মানুষ মনোস্ত্বাত্বিক সমস্যায় ভোগেন ,(আমার পেশাগত কারণে আমি এটা লক্ষ্য করেছি ) এই ধরণের দৃশ্যদূষণ কিছুটা হলেও আর জন্য দায়ী।


    দ্বিতীয়ত আমার লেখা মূর্খ কথাটির প্রসঙ্গে বলি ,আমার ধারণা আপনি রোমের সম্রাট নিরোর গল্পটা জানেন। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে বলি পন্থী কয়েকজনের সাথে কথা বলে দেখেছি, তাঁরা বলির পক্ষে যে যে যুক্তি খাড়া করেন সেগুলোকে আমার মূর্খতারই নামান্তর বলে মনে হয়েছে। আমি যতদূর জানি বলাগড় বা শ্রীপুর সমস্যাহীন গ্রাম নয়, বহু মানুষই বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ,তার পরেও কিছু তথাকথিত শিক্ষিত মানুষ,যাঁরা নিজেদের সামাজিক সমস্যার কথা ভুলে গিয়ে ,সময়কে সম্মান না জানিয়ে ,কিছু কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে ,তার পক্ষে হাস্যকর কিছু যুক্তি সাজিয়ে মোষ বলির মতো একটি কুৎ্সিত প্রথার পক্ষ্যে ভোট দেন এবং জিতে বাজি ফাটিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন ,তাঁদের প্রতি আমার করুণা হয়। যাঁরা দৃশ্যদূষণ ও নিজেদের ও সমাজের মনস্ত্বাত্বিক সমস্যা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই ,তাঁরা নিজেরাই সম্রাট নিরোর মতো সমস্যার শিকার বলে আমি মনে করি।

    তৃতীয়ত 'Make Eid happy for all- Try Vegan'এর প্রসঙ্গে বলি, এই স্লোগান টি আমার নয়। কিছুদিন আগে পত্র-পত্রিকার সৌজন্যে এই খবরটি আমার চোখে পরে , পশুবলি বা কুরবানীর বিরুদ্ধে এই আন্দোলনটি আমাকে বিশেষ ভাবে নাড়া দেয়। লেখার শুরুতে PETA র এই আন্দোলনের খবরটি পরিবেশন খবরটি পরিবেশন করেছি মাত্র।



    চতুর্থত Learn Stock বা আপনার লেখার প্রত্যুত্তরে আমি যে যুক্তিগুলো দেবার চেষ্টা করেছি ,(আপনার পরামর্শের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে বলি ) সেগুলি প্রসঙ্গক্রমেই এসেছে। আমার মূল আপত্তি ছিল বলি বা কুরবানীর মতো ধর্মের নাম করে নিরীহ পশুহত্যার প্রতি, তাই আমি আমার মতো করে আর প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করেছি মাত্র।



    পরিশেষে বলি ,এক জায়গায় আপনি বলেছেন ' অর্থাৎ আপনার এই লেখাটি 'মোষ-বলি রদ' আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার ' এটা বোধহয় ঠিক কথা নয়। বেশ কিছু বছর ধরে শ্রীপুর,বলাগড় ,জিরাট ও অন্যান্য অঞ্চলের কিছু মানুষ এই নৃশংস প্রথার বিরুদ্ধে কখনো নিঃশব্দে কখনো বা সশব্দে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন,যার পরিণতিতেই গত রবিবারের ভভোটাভুটি। আমার এই লেখাটি তাঁদের এই আন্দোলনকে সম্মান জানিয়েছে। আমি জানিনা কবে বলিপন্থী মানুষেরা সময়কে সম্মান জানিয়ে,নিজেদের , সন্তান-সন্ততিদের ও সমাজের কথা ভেবে এই প্রথাকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারবেন .......... যদি কোনোদিন আমার স্বপ্ন(আগামী বসন্তে শ্রীপুর বলাগড়ের রাসমেলা ও বিন্দুবাসিনী পুজো হোক বলিবিহীন,নির্মল,.............মা বিন্দুবাসিনীর চরণে নিরীহ পশুদের বদলে ,আমরা বলি দিই আমাদের কাম ,ক্রোধ,লোভ ও হিংসাকে ,........... ) সত্যি হয় ,তার পূর্ণ কৃতিত্ব আপনাদের মতো মোষ বলি বিরোধী ,সমাজসচেতন ,শিক্ষিত ও বিদগ্ধ আন্দোলনকারী মানুষদের ,আমার এই দু লাইন লেখার নয়।

    ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন,কখনো আপনার সাথে মুখোমুখি আলাপ করার ইচ্ছে রইলো।

    ReplyDelete
  9. লেখাটিতে কয়েকটি সংযোজন করার জন্য ধন্যবাদ। আরো ভালো লিখুন। শুভেচ্ছা রইল।

    ReplyDelete
  10. niladri
    অনেক দিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি তোদের new gwnwration এর help চাই
    এর পর কোন পথে এগোন যাবে বল
    ঋতা পিসি

    ReplyDelete
  11. sorry generation বানান টা ভুল post হওয়ার জন্য

    ReplyDelete
  12. আজকের প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা এইসব কেউ সংস্কারের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসবে, এ বিষয়ে আমি 100% আশাবাদী .

    ReplyDelete
  13. তন্ত্র,সংহিতা,শ্রীমৎ ভগবত সহ আরো অনেক শাস্ত্রে পশুবলি বা প্রানী হত্যার বিরূদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েেছে,তারপর ও কেন দেবী পূজার নামে এই পশুবলি / হত্যা? গীতার পাতা উল্টে দেখলে এই রক্ত পিপাসু রা দেখতে পারে দেবী বলিয়াছেন "যে নিজের রসনার জন্য প্রানী হত্যা করে খায় আমি তাদের পাপ খন্ডন করি কিন্তু যে আমার নামে বলি দিয়ে বাসনা পূরন করে তার পাপ খন্ডন করি না

    ReplyDelete
  14. রিতা পিসি, আমি গত আট বছরে একবার মাত্র রাসে বাড়ি গেছি। তাই এখন মোষ-বলি বিষয়ে মানুষ কিভাবে সারা দেয় সে ব্যাপারে সম্মক ধারণা আমার নেই। তবে ছোটবেলাতে মোষ-বলি দেখার জন্য মানুষের যে ভিড় দেখতাম সেটা বড় হয়ে অনেক কমে আসতে দেখেছি। এখন যা লিখছি সেটা শুধুমাত্র ভোটের ফল, সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা কিছু তর্ক-বিতর্ক আর বলাগড়ের মানুষ সম্পর্কে আমার কিছু ব্যক্তিগত ধারণার ওপর নির্ভর করে। বাস্তবসম্মত নাও হতে পারে।

    প্রথমত, আমার মনে হয় না বলাগড়ের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে গীতা-টিতার খুব একটা গুরুত্ব আছে। যারা মোষ-বলির পক্ষে প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন জানাচ্ছে তাদের একটাই উদ্দেশ্য - পৌরুষের আস্ফালন। তাদের এই পৌরুষ এবং সেই সংক্রান্ত ইগো যতক্ষণ না কমছে তারা বিরোধিতা চালাবেই। দ্বিতীয়ত, ভোটের ফল আমার কাছে খুব আশ্চর্যজনক লেগেছে, কারণ সেটা বড্ডো বেশি একতরফা। আমার মনে কিছু প্রশ্নের উদয় হয়েছে - শ্রীপুরের কত শতাংশ লোক ভোট দিয়েছে ? পুরুষ ও নারীর অনুপাত কত ? ছোটরাও কি ভোট দিয়েছে ? বয়স্ক মানুষের অনুপাত কত ? যে সকল বাবা মা তাঁদের বাচ্চাদের মোষ-বলি দেখতে দিতেন না বা দেন না তাঁরা কি ভোট দিয়েছেন? কেউ কি ভোট দিতে লজ্জা পান ? ইত্যাদি ইত্যাদি।

    ভোট যখন একবার হয়েছে, আসছে বছর আবার হোক। আমার দৃঢ় বিশ্বাস বলাগড়ে মোষ-বলির বিপক্ষ্যে থাকা লোকের অনুপাত বেশি। সবাই যদি নির্দ্বিধায় ভোট দেন তাহলে মোষ-বলি উঠে যাবে। ঘরোয়া আলোচনায় কারা পক্ষে কারা বিপক্ষে সেসব তথ্য সংগ্রহ এবং নিজেদের মধ্যে বন্টন করে একটা তালিকা করা যেতে পারে। সেই তালিকা ভোটের সময় কাজে আসতে পারে। শিশুদের মাধ্যমে মানুষের অন্তরাত্মা জাগ্রত করার চেষ্টা করা যেতে পারে। এসব হয়তো এবারেও হয়েছে। আমি বিস্তারিত কিছুই জানি না।

    ReplyDelete
  15. মোষ বলির কট্টর কিছু সমর্থক কে ভোটের কাজে লাগান দেখেই বোঝা যায় ভোটের ফল কেন এক তরফা

    ReplyDelete
  16. সময় বদলাবে। তবে আন্দোলনও চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আসলে পুরোটাই কিছু লোকের ইগোর লড়াইয়ের ফসল। ভোটের জয়ে বাজি পোড়ানো তার জলন্ত প্রমাণ

    ReplyDelete
  17. একদিন দেখবেন এসব বন্ধ হয়ে যাবে।।।

    ReplyDelete